মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল ছবি


নির্বাচনের প্রচারে দিয়ে দুর্ঘটনায় পা জখমের বিষয়টি নিয়ে এবার সরাসরি মুখ খুললেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  ভিড়ের মধ্যে মমতার পায়ের জখম করায় বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু-এমন অভিযোগ সরাসরি করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

সোমবার নন্দীগ্রামে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর দিকে অভিযোগের তীর ছুঁড়ে দৃঢ় প্রত্যয়ী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভোটের সময় তুই আমার পা জখম করিয়েছিস।  আমি চেপে গেছি ভদ্রতা করে। আজও আমায় পা ভাঙা নিয়ে হুইল চেয়ারে বসে মিটিং করতে হচ্ছে।  তোমার নির্দেশ ছাড়া এসব হতে পারে না।

মমতা বলেন, ‘কোনও নন্দীগ্রামের লোক এসব করতে পারে না। বহিরাগত গুন্ডাদের দিয়ে এ সব করিয়েছ তুমি।’

দ্বিতীয় দফায় বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ নন্দীগ্রামে। বুধবার শেষ হবে প্রচার পর্ব। তার আগে একটির পর একটি কর্মসূচিতে যোগ দেন মমতা। এরই মধ্যে একটি ছিল বয়াল পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানেই মমতা বিরুলিয়া বাজারে পায়ে চোট পাওয়ার ক্ষেত্রে নাম না করেও স্পষ্টতই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আঙুল তুললেন। নিজেকে ‘আহত বাঘ’ হিসেবে উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘মনে রাখবেন মৃত বাঘের থেকেও আহত বাঘ আরও ভয়ঙ্কর।’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘ইলেকশনের সময় তুই আমার পা জখম করিয়েছিস।’’

সোমবার মমতার সভায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন তৃণমূলের গায়িকা প্রার্থী অদিতি মুন্সি। এ ছাড়াও শিল্পী শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায় গান শোনান। এর পরে গোটা বক্তৃতাতেই শুভেন্দুকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘‘আমি বাইরের মেয়ে? তুই ব্যাটা কোনও হরিদাস কাঁথির ছেলে, কী করে বেড়াস? তুই কবে নন্দীগ্রামের ছেলে হলি? তুই কী করে ভূমিপুত্র হলি? তোর তো এখানে ভূমিও নেই, জমিও নেই। তুই তো দালালি করে গেছিস। আগে সিপিএমের দালালি করেছিস, এখন বিজেপি-র দালালি করছিস। কী দিইনি তোকে?’’

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তোকে পরিবহণ দফতরের মন্ত্রী করেছি।  তোকে পরিবেশ দফতর, সেচ দফতরের মন্ত্রী করেছি। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করেছি। তোর বাবাকে দীঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করেছি, তোর ভাইকে কাঁথি পৌরসভার চেয়ারম্যান করেছি। এ ছাড়াও তাকে বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘‘কী নেই ওদের? পেট্রোল পাম্প থেকে শুরু করে লঞ্চ থেকে শুরু করে, ব্যাঙ্ক থেকে শুরু আই টি আই থেকে শুরু করে ট্রলার থেকে কী নেই?’

সোমবার নন্দীগ্রামের সভা থেকে হুঁশিয়ারির সুরও শোনা যায় মমতার গলায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা খেলা খেলি ভদ্র ভাবে। কিন্তু আমার সঙ্গে কেউ লাগতে এসো না। আমাকে আঘাত করলে আমি আগুনের মতো ঝরে পড়ি, সিংহের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ি।’’